হিমশীতল বা লু-হাওয়া যে তাপমাত্রাই হোক না কেন, মানব শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া তার নিজের তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে নির্দিষ্ট রাখতে চায়।
শরীরে তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেই কেবল মানুষ জাগতিক কাজকর্ম করে থাকে।
কিন্তু সূর্যের তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল তাপমাত্রা নির্দিষ্ট একটি মাত্রায় ঠাণ্ডা রাখার জন্য শরীরকে বাড়তি কাজ করতে হয়।
এর ফলে ত্বকের কাছাকাছি রক্তবাহী ধমনীগুলো তীব্র তাপ চারপাশে ছড়িয়ে দিতে বেশি করে কাজকরতে শুরু করে, আর তখনই ঘাম হতে শুরু করে।
সে শ্বেতবিন্দুর সঙ্গে শরীর থেকে ক্রমে তাপ বেরিয়ে যেতে থাকে।
কখন সমস্যা হয়?
শুনতে খুব সাধারণ শোনালেও, শরীরের জন্য ব্যপারটি মোটেও সহজ নয়। যত গরম, মানব শরীরের জন্য তা সামলানো তত কঠিন।ত্বকের নিচের ধমনীগুলো যখন খুলে যেতে থাকে, তখন রক্তচাপ কমে যায় এবং হৃদপিণ্ডের কাজ বাড়িয়ে দেয়।
শরীরের সবখানে রক্ত পৌঁছে দিতে হৃদপিণ্ডকে তখন দ্রুত পাম্প করতে হয়।
এর ফলে শরীরে হালকা র্যাশ বা দানা দেখা দিতে পারে, মানে ছোট ফুসকুড়ি মতন যা চুলকাতে পারে।
অথবা কারো পা ফুলে যেতে পারে গরমে।
কিন্তু রক্তচাপ বেশি কমে গেলে হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে।সেই বেশি ঘামের কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়তে পারে।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
অতি গরমে স্বাস্থ্যবান মানুষের হিট স্ট্রোক হবার আশংকা কম। কিন্তু কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন।
শুরুতেই বৃদ্ধ এবং যাদের আগে থেকেই অসুস্থতা রয়েছে, তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে বেশি।
যাদের ডায়াবেটিস টাইপ ওয়ান বা টু, রয়েছে তাদের শরীর দ্রুত পানি শূণ্য হয়ে পড়ে, এবং কিছু জটিলতা দেখা দেয়।
এছাড়া বাচ্চাদের খুব কষ্ট হয় বেশি গরমে।
অনেক সময় তারা নিজেদের অস্বস্তির কথা বুঝিয়ে বলতে পারে না, যে কারণে মা-বাবারা সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিতে পারে না।
তাপদাহের সময় কী করা উচিত?
করণীয় একেবারে সাদামাটা—ঠাণ্ডা থাকুন আর শরীরকে পানিশূন্য হতে দেবেন না।
গরমে রোদের মধ্যে কাজ না করা এবং বেশি পরিশ্রমের কাজ করা থেকে বিরত থাকা ভালো।
ঘরে দিনের বেলাতে পর্দা টেনে দিন। প্রচুর পানি এবং দুধ পান করুন।
সাধারণত দিনের বেলাতেই গরমে বেশি হয়। কিন্তু রাতের অতি গরমও শরীরের জন্য ক্ষতিকর।