যে বেকার বিগত ৫ বছর ধরে শুধুই চাকরি খুঁজছে, চাকরি খুঁজার নামে বিভিন্ন কোচিং বাংক ড্রাপ সহ ইন্টারভিও দিতে দিতে ৪–৫ লাখ টাকা নতুন করে ঋণ করেছে চাকরির আসায় তার ও তার পরিবারের আর্থিক ও মানসিক কি অবস্থা হতে পারে তা একমাত্র ভুক্তভুগি ছাড়া কখনো কেউ বুঝবেনা । যেখানে যায় সেখানেই ১০ লাখ টাকা ঘুষ ছাড়া কথা বলারও সুযোগ নেই, ঘুষ দিয়েও চাকরির নিশ্চয়তা নেই ঘুষ দিয়েও প্রতারনার স্বীকার লাখো মানুষ।
বেকার ছেলেটি / মেয়েটি মা – বাবার দিকে লজ্জায় তাকাতে পারেনা সারাক্ষনি এমন সব কথা শুনতে হয় আর বাঁচতে ইচ্ছা করেনা অনেকেই এই বেকারত্বর জ্বালা সইতে না পেরে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ এমন লোকের সংখ্যাাও কম নয়। তাই সকল আসা ছেড়ে দিয়ে সাময়িক কষ্ট ভুলে থাকতে টি ভি ফেস বুক, ইউটিউব, চ্যাটিং ফোনে কথা বলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাবা–মার বোঝা হয়ে অযথা সময় নষ্ট করছে আর মানষিক ভাবে হতাশ হয়ে জড়িয়ে পরছে নেশা ও অপরাধের চক্রে। পূর্বের ব্যবসার কোনো অভিজ্ঞতা ও পুঁজি না থাকার কারনে নতুন কোন ব্যবসাও করতে পারছেনা ।
করোনার আগে বেকার যুবকেরা একটি সুন্দর স্বপ্নদেখে। প্রতি বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনালে ভীড় জমাতো একদল তরুন। তাদের লক্ষ্য ঢাকা, কারন এদেশে ঝাঁড়ুদার নিয়োগ করলেও তার নিয়োগ পরীক্ষা হয় ঢাকা থেকে। তারা কেউ প্রিলি দেবে, কেউ রিটেন, কেউ ভাইভা। কারো প্রথম, কারো পঞ্চাশতম; কারো বয়স শেষের শেষ পরীক্ষা। মা ফোন দেয়– ‘বাবা পাশ করেছিস দুই বছর হল; একটা কিছু কর।
তোর বাবার পক্ষে আর সম্ভব না। মা তোর জন্য আশীর্বাদ করছি। এবার তোর চাকরি হবেই হবে‘বাবা ফোন দেয়-‘বাবা আমাদের জন্য না; তোর জন্য একটা চাকরি ঠিক কর; বয়স কত হয়েছে খেয়াল আছে তোর। কথা দেয়া প্রিয়তমার ফোন বাজে – ‘তুমি বিসিএস ক্যাডার হও; ব্যাংকার হও এইটা আমি এখন আর চাই না; একটা ছোটখাট চাকরি যোগাড় করো প্লিজ। এখন দেখা যাচ্ছে ৩৮% বিসিএস ক্যাডার বেকার।
বড় জব পরে দেখা যাবে। শুধুমাত্র একটি চাকুরির জন্য যুবকটি অনার্স ফাস্ট ইয়ার থেকে মুখস্ত করে আসছে – কারেন্ট নিউজ, কারেন্ট ওয়ার্ল্ডয়ের সব সংখ্যা; জবের সকল গাইড। পৃথিবীর ২১৫ টি দেশের রাজধানী, মুদ্রা, আয়তন, জনসংখ্যা, রাষ্ট্রনায়কের নাম সবই তার মুখস্থ।
যমুনা ও পদ্মাসেতুর পিলার কয়টা ? চর্যাপদের কোন লাইন কে লিখেছেন ? কোন জেলায় কি আছে? পৃথিবীর কোন নদী, শহর, প্রনালী, বাঁধ কোথায় ? সবই তার মুখস্থ। যুবকটি একটি সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে রাতভর পাড়ি দিয়ে ঢাকা পোঁছায়। সকালে পরীক্ষা। ঢাকায় নেমে হাতমুখ ধুয়ে ২টা পরটা গিলে এক্সাম হলে দৌড় দেয়। পরীক্ষা ভালোই দেয়; হল থেকে বের হওয়ার পরপরই পর্যায়ক্রমে– মা, বাবা, প্রিয়তমা, বন্ধুদের ফোন। বাসে ওঠে যখন শুনে তার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেছে; মন ভেঙ্গে যায়। বেশিরভাগ যুবকেরাই বার বার ভাইভা দেই, কিন্তু চাকরি মিলে না।
ফিজিক্স থেকে পাস করে চাকরি মিলে হয়ত কৃষি ব্যাংকে; সারাজীবন রসায়ন পড়ে হয়ত ঢুকে পুলিশ বিভাগে; প্রানীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা পড়ে তাকে ঢুকতে হয় মার্কেটিং জবে !! কেউ পুরো বেকার; কেউ অর্ধেক বেকার; কেউ কোনমতে পড়ে থাকে পেট চালানোর জন্য।।
স্বাধীনতার এতো বছর পরও আমাদের যুবকদের জন্য চাকরির নিশ্চয়তা নেই রাষ্ট্র ডিজিটাল হয়; জিডিপি বাড়ে; বাজেটের আকার বাড়ে; শতশত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি দেশে ঢুকে; কেবল উন্নয়নের চুক্তি হয়; বৈঠক হয়; ঝাঁকে ঝাঁকে সেমিনার–সিম্পজিয়াম হয় ……
কেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাড়ে না, কর্মসংস্থান বাড়ে না। বেকারের ভীড় বাড়তে থাকে; ১টি পোস্টের বিপরীতে উপছে পড়ে হাজার হাজার প্রতিযোগী ।
তারপরও যুবকেরা একটি সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার ঢাকার উদ্দেশ্যে ছুটে;কোন এক শুক্রবারে তার স্বপ্ন পুরন হবে।। মাকে ফোন করে বলবে– ‘মারে আমার চাকরি হয়েছে‘বাবাকে বলবে– ‘বাবা তুমি এবার বিশ্রাম নাও; শুধু বাজার করবে; পত্রিকা পড়বে আর টিভি দেখবে‘। প্রিয়তমাকে বলবে-‘আগামী মাসেই তোমার বাবার সামনে আমি দাঁড়াবো; দেখি কে ঠেকাই‘
এখনি ওয়ার্ল্ড ফেমাস ২৪ ফেসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে ও গ্রুপে জয়েন করে বিস্তারিত জানার জন্য মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করুন ।