ভালোবাসা কাকে বলে? ভালোবাসা নাকি আসক্তি !

ভালোবাসা ও আসক্তি – শব্দদুটো দেখলেই কেবল দুজন নারী-পুরুষের প্রেমের ছবিটা আমাদের বেশিরভাগ মানুষের চোখে ভেসে ওঠে। কিন্তু না, ভালোবাসা এবং আসক্তি – এই টার্ম দুটো পিতামাতা ও সন্তান, প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী ও স্ত্রী সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আমাদের মেন্টাল হেলথ অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতা বজায় রাখতে এই দুটো টার্ম সম্পর্কে ক্লিয়ার হওয়া খুব প্রয়োজন।

 

পৃথিবীর ইতিহাসে সম্মানিত বেশ কয়েকজন মনীষীদের লেখা বিভিন্ন বই পড়েছি, যারা মানব জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন এবং নিগূঢ়ে অনুধাবন করেছেন। তাদের সেই লেখা পড়ে আমার সীমিত জ্ঞান থেকে যতটুকু বুঝতে পেরেছি, ততটা এখানে নিজের ভাষায় তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

১. পিতামাতা ও সন্তানের মধ্যে আসক্তি:

আপনি যদি একজন বাবা হতে চান কিংবা মা হতে চান, তবে আগে এটা ঠিক করে নিন– সন্তানের আগমন হোক, আপনি এটা কেন চান? আপনার অপূর্ণ সব প্রত্যাশাগুলো সন্তানকে দিয়ে পূরণ করাবেন, এইজন্য বুঝি? যদি এটাই কারণ হয়, তবে আপনার সন্তান না নেয়াই উচিৎ। অহেতুক তাজা ও সম্ভাবনায় ভরপুর একটা প্রাণকে এই পৃথিবীতে নিয়ে এসে, সেই প্রাণটিকে আপনার প্রত্যাশা পূরণের যন্ত্র বানানোর কোনো অধিকার আপনার নেই।

কথাগুলো খুব শক্ত এবং অদ্ভুত লাগছে তাই তো ! প্রথমত: এই কথাগুলো আমার মতো একজন তুচ্ছ জ্ঞানসম্পন্ন মানুষের ব্যক্তিগত মতামত নয়। এই কথাগুলো সেই সকল জ্ঞানী ও পরম সম্মানিত মনীষীদের কথা, যারা মানব জীবনের গূঢ় তত্ত্বগুলোকে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। যারা বুঝতে পেরেছিলেন, কেন আমরা এত কষ্ট পাচ্ছি, অথচ আমাদের এই মনোজগতটা অনাবিল সুখের আঁধার হবার কথা ছিলো !

ভালোবাসা কাকে বলে ভালোবাসা নাকি আসক্তি !

 

আপনি ভালো করে নিজেকে ও অন্যদের পর্যবেক্ষণ করে দেখুনতো। ছোটোবেলা থেকে আপনার পিতামাতা আপনাকে তাদের প্রত্যাশা পূরণের মেশিন বানিয়ে রাখেননি ? নি:সন্দেহে পিতামাতা আমাদের সবচেয়ে আপনজন ও কল্যাণকামী,  কিন্তু সেটা কখন?

যখন পিতামাতা সন্তানের মনের ডানাদুটোকে বেঁধে না দিয়ে, তাদের প্রত্যাশার বোঝা সন্তানের উপরে চাপিয়ে না দিয়ে, বরং সন্তানকে নিজের ডানা দুটো মেলে উড়তে শেখায়, সন্তানকে আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায়, ভালোবাসার নামে পরনির্ভরশীল হতে শেখায় না….. কেবল তখনি পিতামাতা সন্তানের সবচেয়ে আপনজন ও কল্যাণকামী হতে পারে।

অবশ্যই সব পিতামাতা একরকম নয়। কিন্তু ম্যাক্সিমাম পিতামাতা, বলতে গেলে ৯০% বাবা-মা সন্তানের জন্ম দেয়, কেবল এই পৃথিবীতে তাদের অপূর্ণ প্রত্যাশাগুলোর পূর্ণতা দেয়ার মাধ্যম হবে সন্তান, এই উদ্দেশ্যে। যখনি সেই সন্তান তাদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ, তখনি পরিবার ও সোসাইটির চোখে সেই সন্তান হয় ‘অবাধ্য’ কিংবা ‘অযোগ্য’ !

এখন বলতে পারেন….. পিতামাতার আশা- ভরসা তো হবে সন্তানকে ঘিরেই। সন্তানকে নিয়ে তো স্বপ্ন দেখতেই পারে। এত কষ্ট করে সন্তানকে লালন-পালন করবে, সন্তানকে ভালোবাসবে। সেই সন্তানকে ঘিরেই মা-বাবার সব প্রত্যাশা থাকবে। এতে দোষ কী?

ব্যস! হয়ে গেলো। এই জায়গাটাতেই আমরা ম্যাক্সিমাম মানুষ বড্ড ভুল, মারাত্মক ভুল ক্যালকুলেশন করে ফেলি। যেই ভালোবাসায় কেবল প্রত্যাশার সমারোহ থাকে, সেটা ভালোবাসা নয়। সেটা শুধুই আসক্তি…আসক্তি…. কেবলই আসক্তি ! এই কথাটা আমি, আপনি অথবা পুরো জগতের কেউ না মানুক – কিন্তু এই সত্য সত্যই থাকবে। জগত মানবে না বলে, সত্য কখনো মিথ্যা হয়ে যাবে না ! আর মিথ্যেও কখনো সত্য হবে না।

একজন আদর্শ পিতামাতা, যারা সন্তানকে সত্যিই ভালোবাসেন, তারা এই পৃথিবীতে সন্তানের জন্ম দেয় কেবল একটা উদ্দেশ্যেই….. ‘আমি এই পৃথিবীতে একটা প্রাণকে নিয়ে আসবো, যেনো সেই প্রাণটা এই পৃথিবীর জন্য কল্যানকর হয়। সেই প্রাণের দ্বারা এই জগতের কোনো ক্ষতি যেনো না হয়। আর এইটা নিশ্চিত করার জন্য আমার সন্তানকে যা যা দেয়া দরকার, আমি তাই দেবো। আমার প্রত্যাশা কেবল এই একটাই। এটা নিশ্চিত হবার পরে, সেই সন্তানের জীবনের বাকী দায়িত্বগুলো তাঁর নিজের, আমার নয়।  আমার দায়িত্ব তাকে যোগ্য করে তোলা, যেনো সে নিজের জীবনের সব সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব নিজে নিতে পারে ‘ !

ভালোবাসা কাকে বলে ভালোবাসা নাকি আসক্তি !

এবার বলুন তো…. আমাদের সোসাইটিতে ক’জন মানুষ এরকম চিন্তা করে সন্তানের জন্ম দেয়? বেশিরভাগ মানুষ সন্তান চায় এটা ভেবে…… [আরে আমার সন্তান ডাক্তার – ইঞ্জিনিয়ার হবে, আমি যেনো অমুকের সাথে বড় গলায় গর্ব করতে পারি !’  ‘আহা, আমার সন্তান চাইইই চাই, নইলে আমাদের মা-বাবা নাতি-নাতনির মুখ না দেখেই চলে যাবে? কী দু:খ আহারে ! ]

এর ফলাফলটা কী হয় ?  আপনি কী দেখছেন না? প্রতি বছর যখন এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়, মেডিক্যাল কলেজ কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোর অ্যাডমিশন টেস্টের রেজাল্ট বের হয়, তখন সোস্যাল মিডিয়া মুখর থাকে অমুক ছাত্র অমুক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। যারা আত্মহত্যা করে না, তারা অনেক ভয়াবহ ডিপ্রেশনের মধ্যে চলে যাচ্ছে। এরা কারা জানেন? এরা হচ্ছে ঐ সকল মহান পিতামাতার সন্তান, যেই সকল পিতামাতা জীবনভর সন্তানদের নিজেদের প্রত্যাশা পূরণের মেশিন হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে !

আপনি যদি একজন সন্তান হোন–  পিতামাতাকে ভালোবাসা, তাদের সম্মান করা, পরিণত বয়সে তাদের দায়িত্ব নেয়া… এগুলো অবশ্যই আপনার করণীয় কাজ। কিন্তু তাদের প্রত্যাশা পূরণ করার কোনো দায় আপনার উপরে বর্তায় না। এবং আপনার প্রত্যাশা পূরণ করার দায়ও আপনার সন্তানের থাকবে না। এই পৃথিবীতে কোনো মানুষ অন্যের প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য আসে না। আপনার প্রত্যাশা পূরণের দায় কেবল আপনার একার। যদি নিজের প্রত্যাশা নিজে পূরণ করতে পারেন তো ভালো, আর না পারলে তো না পারলেন। 

কিন্তু নিজের অপূর্ণ প্রত্যাশা সন্তান বা অন্য যে কারোর উপরে চাপিয়ে দিয়ে বলবেন…. [এই নাও আমার স্বপ্ন আমার আশা, এবার তুমি এগুলো পূরণ করো। কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি, তোমার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। এইবার তুমি সেই ঋণ পরিশোধ করো ]–  এটাকে আপনি ভালোবাসা বলেন? এটাকে আপনি প্রেম বলেন ? এরচেয়ে চরম পাশবিকতা আর কী হতে পারে ! এটাকে বলে ভয়াবহ আসক্তি!

ভালোবাসা কাকে বলে ভালোবাসা নাকি আসক্তি !

ভালোবাসা কখনো সেই মানুষটির উপরে নিজের প্রত্যাশাকে চাপিয়ে দেয় না। বরং ভালোবাসার দাবি হলো…. সেই মানুষটিকে মুক্ত করে দেয়া। অথচ পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বন্ধনটা তো পিতামাতাই সন্তানকে দেয়…. ‘আমি কষ্ট করে তোমাকে জন্ম দিয়েছি, এত ত্যাগ স্বীকার করেছি। So তোমাকে নিয়ে মানুষের সামনে গর্ব করতে পারবো না কেন? ‘ -–  এটাকে আপনি ভালোবাসা বলেন??

এখন তো প্রশ্ন করা উচিৎ, সন্তান কী আপনাকে বলেছিলো – ‘আমাকে পৃথিবীতে নিয়ে আসো’? আপনি নিজের ইচ্ছায় তাকে নিয়ে এসেছেন, অথচ ঋণ পরিশোধ করতে বলছেন তাকে !

আপনি যদি একজন সন্তান হোন, প্রথমত আপনি একজন মানুষ; তারপরতো কারোর সন্তান। So সাবালক হওয়ার পর থেকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে স্বাধীন মতো বাঁচার অধিকার আপনার রয়েছে, এবং সেই সাহসও আপনার থাকা উচিৎ।

একটা কথা প্রচলিত আছে….. ‘বাবা-মায়ের চোখে সন্তান ছোটোই থাকে’ ! আসল কথা হলো, বাবা মা সন্তানকে ছোটো বানিয়ে রাখে, সন্তানরা ছোটো থাকে না। কেবল ইনকাম করার সময় এবং বাচ্চা জন্ম দেয়ার প্রসঙ্গ আসলে তখন হুট করেই সন্তান বড় হয়ে যায়। বাকী সব ক্ষেত্রে সন্তানরা কেন জানি মায়ের কোলে শিশু হয়েই থাকে, তাই না ! ভালোবাসার নামে এ কী ভয়াবহ হঠকারীতার মধ্যে আমরা প্রতিনিয়ত বাস করছি ! অবশ্যই সব পিতামাতা এক না। কিন্তু বেশিরভাগ এমনি।

আপনার বয়স যখন ২০, ২৫, এমনকি ৩০+ একজন যুবক , পরিপূর্ণ এডাল্ট একজন মানুষ আপনি, তখনও খেতে বসলে বলেন [ মা খাবার সার্ভ না করে দিলে খেতেই পারবো না] মায়েরা বলে– [আহা !  আমার ছেলেটা কখনো নিজের ড্রেস নিজে ধুয়েই দেখেনি। আমি না ধুয়ে দিলে হয় নাকি ! আমি ওর ঘর গুছিয়ে না রাখলে কে গোছাবে ! আমাকে ছাড়া ওর পৃথিবী অচল ! আমার ছেলের তো আমাকে ছাড়া চলেই না ]

ঠিক একইভাবে ঐ সেইম বয়সের একটা মেয়ের ক্ষেত্রে পিতামাতা বলে….. [ ‘আহা! আমার মেয়ে তো একদম অবুঝ। পৃথিবীর কোনো কিছু সম্পর্কে ওর কোনো ধারণাই নেই। সরল মেয়ে আমার, সারাক্ষন ঘরেই থাকে, বাহিরের এত হালচাল সে বোঝে না। আমাকে ছাড়া তো মেয়েটা কোথাও যায় না। কোথাও কিচ্ছু চেনে না। মেয়ে আমার অনেক ভালো। আমাদের ছাড়া সে কিছুই বোঝে না ! ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে জানে না ] ব্লা… ব্লা…!

উপরের এই কথাগুলো পড়লে মনে হয়, পিতামাতা যেনো সন্তানকে কতো আদর করে, কতো ভালোবাসে তাই না ! শতধিক্ আমাদের বুদ্ধির উপর ! এটাকে ভালোবাসা বলে না। এটাকে বলে সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের চরম আসক্তি। আগেই বলেছি- ভালোবাসা মানুষকে মুক্ত হতে শেখায়, আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায়। অথচ এখানে তো পিতামাতা ভালোবাসার নামে সন্তানকে চরম পরনির্ভরশীল করে তুললো।

মা একবুক প্রশান্তি নিয়ে বলছেন – [আমি তো আমার ছেলের জগত। আমাকে ছাড়া ওর কোনোকিছুই চলবে না] এটাকে আপনি ভালোবাসা বলেন? মা বলছেন– [আমার মেয়ের মন শুধু ঘরেই পড়ে থাকে। পৃথিবীর কোনো কিছু সে বোঝে না, আমাদের ছাড়া সে চলতেই পারে না’ ] এটাকেও আপনি ভালোবাসা বলেন? এসবের নাম ভালোবাসা নয়। যেই ভালোবাসা একটা মানুষকে অথর্ব, পরনির্ভরশীল, ভীতু, দুর্বল হতে শেখায়…. সেটাকে বলে আসক্তি, ভালোবাসা না।

আপনি ছোটোবেলায় যখন দোকানে একটা ড্রেস কিনতে যেতেন, তখন বাবা-মা আপনার ড্রেসটা সিলেক্ট করে দিতো। কোন গ্রুপ নিয়ে স্টাডি করবেন, সেটাও বাবা-মা সিলেক্ট করে দিলো। আপনি কোন প্রফেশনে যাবেন, সেটাও পিতামাতার সিদ্ধান্ত, বাবা-মায়ের স্বপ্ন বলে কথা ! বিয়ের সময় লাইফপার্টনার চয়েজ করতে যাবেন, সেটাও বাবা-মা সিলেক্ট করে দিলো। শেষ পযর্ন্ত আপনি কখন বাচ্চা নিবেন, সেই সময়টাও বাবা-মা নির্ধারণ করে দিলো…. ‘আমরা নাতির সাথে খেলবো, নাতির মুখ দেখতে চাই’ । বাহ ! বাহ!

আপনি নারী অথবা পুরুষ যেই হোন, আপনি কী ভাবছেন, আপনি পিতামাতাকে খুব সম্মান করছেন? বেশ অনুগত তাদের? আপনি তাদেরকে খুব ভালোবাসেন? কখনোই না। সত্যি বলতে….. আপনি এমনি অথর্ব, ভীতু, দুর্বল, অপরিপক্ক একজন মানুষ, যেই মানুষ তাঁর জামা ও জুতা কেনা থেকে শুরু করে সন্তানের পিতা কিংবা মাতা হবে কিনা– নিজে নিজে এই সিদ্ধান্তটা পযর্ন্ত নেয়ার এতটুকু ম্যাচিউরিটি, সাহস যার মধ্যে নেই।

ভালোবাসা কাকে বলে ভালোবাসা নাকি আসক্তি !

অথচ ফ্যামিলি ও সোসাইটি আপনাকে বড় বাধ্যগত সন্তান বলবে। কিন্তু বাস্তবে আপনি মোটেও পিতা-মাতার বাধ্যগত সন্তান ছিলেন না। আপনি যখন বাহিরে নেশা করতে যেতেন, অপরিণত বয়সে লুকিয়ে লুকিয়ে থার্ডক্লাস মার্কা প্রেম করতেন, এমন আরো অনেক কাজ করতেন, যেই কাজগুলো করার সময় পিতামাতার সিদ্ধান্তের কথা ভাবা উচিৎ ছিলো; কিন্তু আপনি ভাবতেন না।

অথচ আপনার জীবনের যেই সিদ্ধান্তগুলো সম্পূর্ণ আপনার নিজের ম্যাচিউরিটি, নিজের চাওয়া থেকে নেয়া উচিৎ ছিলো– সেই সিদ্ধান্তগুলো আপনি পিতামাতার উপরে ছেড়ে দিলেন। আর সবাইকে খুব দেখালেন, যেনো আপনি কতো বাধ্যগত সন্তান। এটাও আপনার জীবনের অন্যতম বড় ট্রাজেডি !

এর ফলাফলটা কী হয় জানেন ? আপনি যখন ডাক্তার -ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কর্মক্ষেত্রে যান, তখন আপনি হয়ে যান টাকা তৈরি করার একটা মেশিন। আর সেই মেশিনের কাজ অন্যদের প্রতি বর্বর হয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করা। ভালোবাসা দিয়ে আপনি প্রফেশনাল দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। কারণ ওটা তো আপনার বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিলো, আপনার নয়।

আপনার স্বপ্ন ছিলো অন্যকিছু,  যেটা আপনার থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। এরকম আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে, যেই উদাহরণগুলো বলে দেবে যে…. নিজের ম্যাচিউরিটি ও চাওয়াগুলোকে কাজে না লাগিয়ে অন্যের সিদ্ধান্তের উপরে নির্ভর করার শোচনীয় ফলাফল প্রতিনিয়ত আপনি ভোগ করছেন।

মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীরাও সন্তানকে ভালোবাসে। কারণ এটা একটা জৈবিক, Hormonal একটা টার্ম। মানুষের ক্ষেত্রেও একই রকম। কিন্তু এটাকে ভালোবাসা বলে না। এটাকে বলে আসক্তি। সন্তানকে শারীরিক ভাবে জন্ম দেয়ার ফলে হরমোনাল কারণে সন্তানের প্রতি পিতামাতার আসক্তি থাকে, যেটাকে আমরা ভালোবাসা বলি। 

কিন্তু প্রকৃত ভালোবাসা তখনি হবে, যখন কোনো পিতামাতা সন্তানকে বলবেন….. ‘তোমার জগত কখনোই আমাকে ছাড়া যেনো অচল না হয়। আমি পৃথিবীতে থাকি বা না থাকি, তুমি একা বাঁচতে সক্ষম। আমার প্রিয় সন্তান – তুমি কারোর উপর নির্ভরশীল হয়ো না। তুমি এতটা ভীতু, কাপুরুষ হয়ো না। তোমার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে শেখো। কখনো ভুল হবে, কখনো সঠিক হবে। তবুও তোমার সিদ্ধান্ত তুমি নিতে সক্ষম হও। আমি তোমাকে একটা সাহসী, আত্মনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে দেখতে চাই ‘ !

[★★] প্ৰযুক্তি নিয়ে লেখালেখি করতে চান? এক্ষুণি World famous24.net  ভিজিট করে গেস্ট পোস্ট করার জন্য  নতুন  একাউন্ট খুলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ও টিপস এন্ড ট্রিকস নিয়ে নিয়োমিত পোস্ট করুন! হয়ে উঠুন একজন দুর্দান্ত ব্লগার!

Leave a Reply