আজকের আলচ্য বিষয় মানব দেহ নিয়েঃ
প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় মানবদেহে ২০৬ টি হাড় থাকে প্রায় ৭০০ টি মাংসপেশি ৩৬০ টি জোড়া ২২ টি ইন্টার্নাল অর্গান এর সমন্বয়ে গঠিত মানব দেহ ১২ টি সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত হয় মানব সৃষ্টির প্রক্রিয়া মহাবিশ্বের স্রষ্টা আল্লাহপাকের এক বিস্ময়কর সৃষ্টি এই মানব । মানব জাতির সৃষ্টি প্রক্রিয়া নিয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনপাকে বিভিন্ন জায়গায় আয়াত নাযিল করেছেন যেমন সূরা- আল মুমিন এর ১২ থেকে ১৬ নম্বর আয়াত, এছাড়াও সূরা মারিয়াম এর ৬৭ নং আয়াতে আমরা দেখতে পাই মানুষের অনস্তিত্ব হতে অস্তিত্ব দানের বিষয়টি । মহান রব মানবজাতিকে স্মরণ করে দিয়েছেন । অর্থ “মানুষ কি ভেবে দেখেনা যে, আমি ইতিপূর্বে তাকে সৃষ্টি করেছি অথচ সে কিছুই ছিল না” ( সূরা মারিয়াম এর ৬৭ নং আয়াত )
বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষতার যুগে মাতৃগর্ভে ভ্রূণের বিকাশ তত্ত্বের মাধ্যমে যেমনিভাবে জানতে পারি স্রষ্টার সৃষ্টি কৌশল পাশাপাশি মানব শিশুর বৃদ্ধি প্রক্রিয়া আমাদের দৃষ্টি গোচরে আসে। নিম্নে উল্লেখিত চিত্রের মাধ্যমে বিষয়টা আমাদের নিকট স্পষ্ট হবে।
ভ্রূণের বিকাশ
এখানে উল্লেখ্য যে, Fertilized egg (একটি সেল বা কোষ ) এর স্তর হতে Duplication এর মাধ্যমে মানব শিশুর দুনিয়ায় আবির্ভাব ঘটে। পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পাই ২০ থেকে ২৪ বছর বয়স কাল ব্যাপি মানবদেহ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং তার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ পূর্ণতা পায় । এতে দেখা যায় পূর্ণবয়স্ক মানবদেহে প্রায় ৩৭ লক্ষ কোটির চেয়েও বেশি কোষ থাকে যার শুরু হয়েছিল একটি মাত্র কোষ হতে। শিশুকাল হতে দেহ বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়াটা চলে মূলত Call বা কোষ Duplication এর মাধ্যমে। সাধারণত ২০ বছর বয়স পর্যন্ত Call বা কোষ Duplication এর হার উচ্চ মাত্রায় থাকে বিদায় মানবদেহে ঐ বয়সে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায় । এটা নিয়ন্ত্রণ হয় আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ Endocrine System এর মাধ্যমে। মানবদেহের ১২ টি সিস্টেমের মধ্যে এই Endocrine System অন্যান্য সিস্টেমগুলো কে এবং Internal Organ গুলোকে Co-ordinate করে ও নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে ।
সুস্থতা ও শারীরিক কর্মক্ষমতাঃ
প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সুস্থতা ও কর্মক্ষমতার জন্য প্রয়োজন সঠিক মাত্রার সুষম খাবার বা ব্যালেন্স ডায়েট । আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সারাদিনের খাদ্যতালিকায় ৭০% কার্বো-হাইড্রেট ২০ % প্রোটিন এবং ১০% ফ্যাট থাকলে তাকে ব্যালেন্স ডায়েট বলে ।
দেহ রোগাক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ আমরা সাধারণত ৩( তিন ) ভাবে রোগাক্রান্ত হই।
এক. জীবাণুর সংক্রমণেঃ
জীবাণুর সংক্রমণে যে রোগ গুলো হয় তাকে বলে জীবাণু ঘটিত রোগ । যেমন টাইফয়েড,কলেরা ,যক্ষা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, কভিড-১৯ ইত্যাদি। মানব জাতির প্রতি মহান স্রষ্টার এক বিশেষ অনুগ্রহ যে, এই জীবনু ঘটিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেহকে টিকিয়ে রাখার দায়ীত্ব পালন করে আমাদের দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা । যেখানে কাজ করে Immuno-globin বা Antibodies যাদের শরীরে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল থাকে তারা সাধারণত জীবাণুর সংস্পর্শে আসলে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি থাকে এবং ক্ষতি হতে দেহকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় ।
এজন্য আমরা দেখতে পাই যে, একই ধরনের জীবাণু সংক্রমণে আক্রান্ত হবার পর দেহের প্রতিরক্ষার উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল প্রদর্শিত হয় যা আমরা স্মরণকালের এই করোনা মহামারীতে স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি ।
জীবাণু ঘটিত রোগের সবচেয়ে ঝুঁকিতে যারাঃ
১) দুর্বল ইমিউন সিস্টেম যাদের।
২) যারা বিভিন্ন ক্রনিক ডিজিজে আক্রান্ত ।
৩) হার্ট, কিডনী, লিভার, ফুসফুস, ডিজিজে আক্রান্ত ব্যক্তি ।
৪) ডায়াবেটিসের রোগী ।
৫) ত্রুটিপূর্ণ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত ব্যক্তি।
জীবাণু ঘটিত রোগ থেকে বাঁচার উপায়ঃ
১) দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করা। (এজন্য ব্যালেন্স ডায়েট এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা আবশ্যক )
২) সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
৩) সংক্রামিত ব্যক্তি হতে সামাজিক ও শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখা।
৪) ক্রনিক ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সঠিক চিকিৎসা করানো ।
চোখ রাখুন পরবর্তী পোস্টের জন্য ।
মেটাবলিক রোগ কি ,কেনো হয়, তার পতিকার কিভাবে করবেন।
লেখাটি আপনার টাইমলাইনে শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিন।